Bangla Hasir Goplo বাংলা হাসির গল্প ও মজার গল্প
কয়েকটি হাসির গল্প যা মজার পাশাপাশি কিছু শিক্ষা ও দিবে। Bangla Hasir Goplo। ছোটদের হাসির গল্প। Funny Story Bangla
১। গল্পের নামঃ মহাবিপদে সুমন মিয়া
গ্রামের এক মানুষ, সুমন মিয়া, ছিল ভীষণ অলস। কাজ করতে তার মন চায় না, কিন্তু খেতে ও আরামে থাকতে চায় রাজা-বাদশাহর মতো। তার বউ রুপা প্রতিদিন তাকে কাজ করতে বলে, কিন্তু সে কোনো না কোনো অজুহাত দিয়ে পালিয়ে যায়।
একদিন রুপা চটেছেন ভীষণ। বললেন,
“তোমাকে যদি কিছু কাজ না করতে দেখি, তাহলে তোমার ভাত বন্ধ! আজই মাঠে গিয়ে গরু চরাতে হবে।”
ভয়ে সুমন মাঠে গেল, কারণ খাওয়া বন্ধ হলে তো জীবনই শেষ। মাঠে গিয়ে সে গরু চরাতে শুরু করল। কিন্তু অলস মানুষ তো! কিছুক্ষণ পর গরুগুলোকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নিজে এক গাছের নিচে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে গেল।
ঘুম ভাঙার পর সুমন দেখে, গরুগুলো নেই! চমকে উঠে এদিক-ওদিক খুঁজতে লাগল। মনে মনে ভাবে, “এখন রুপা যদি জানতে পারে, আমার তো শেষ!”
হঠাৎ একজন পথচারী তাকে জিজ্ঞেস করল,
“ভাই, এভাবে দৌড়াচ্ছেন কেন?”
সুমন উত্তর দিল,
“গরু হারিয়ে গেছে।”
পথচারী বলল,
“কতগুলো গরু ছিল?”
সুমন হোঁচট খেয়ে বলল,
“গরু কতগুলো ছিল, সেটা কি গরুর নাম! আমি জানি না, কিন্তু কালো একটা ছিল!”
পথচারী হেসে বলল, “আপনার তো মাথা ভালো না। গরুর সংখ্যা না জানলে খুঁজবেন কীভাবে?”
সুমন মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল,
“তুমি জানো না, আমার বউ রুপার রাগ কী জিনিস। যদি খালি হাতে ফিরে যাই, আমার দিন শেষ।”
পথচারী হেসে তাকে সাহায্য করতে রাজি হল। কিছুক্ষণ খুঁজে তারা গরুগুলো পেল। কিন্তু গরু ছিল ১০টি। সুমন গুনে বলল,
“ওরে বাবা! আমার তো ১১টা ছিল। বাকি গরুটা গেল কোথায়?”
পথচারী অবাক হয়ে বলল,
“এখানে তো ১০টা গরু। আপনি কি ভুল করছেন?”
সুমন মাথা নাড়ল,
“না না! দেখো, আমি ১টা গুনতে ভুল করেছি। আমিও তো এক গরু!”
পথচারী হেসে লুটোপুটি খেতে লাগল। আর সুমন মিয়া গরুগুলো নিয়ে বাড়ি ফিরল, বউয়ের সামনে গিয়ে বলল,
“রুপা, আজ থেকে আমাকে গরুর হিসাব করাতে পাঠিও না। আমি গরুদের সঙ্গে থাকতে থাকতে নিজেই গরু হয়ে যাচ্ছি!”
শেষে হাসির রোল পড়ে সুমন মিয়ার গ্রামে। আর রুপা বলল, “তুমি আসলেই মহাবিপদ!” 😄
২।গল্পের নামঃ জগলুর নতুন ব্যবসা
জগলু ছিল গ্রামের সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলে পরিচিত। তবে তার এই বুদ্ধি প্রায়ই এমন কিছু কাজ করিয়ে নিত যা সবাইকে হাসিয়ে কাঁদিয়ে ছাড়ত।
একদিন জগলু ভাবল, “কাজকর্ম করে আর লাভ নেই, এবার একটা ব্যবসা শুরু করতে হবে। শুনেছি শহরে ‘ঠেলাগাড়ি’ দিয়ে ফল বিক্রি করলে অনেক টাকা আয় করা যায়। আমিও তাই করব!”
পরদিন শহর থেকে একটা পুরনো ঠেলাগাড়ি কিনে আনল। কিন্তু ফল কিনতে টাকা কম পড়ল। তাই সে ঠিক করল, নিজের বাগানের পাকা কলা বিক্রি করবে।
পরদিন সকালে ঠেলাগাড়ি সাজিয়ে জগলু রাস্তায় বের হল। সবার সামনে গলা ফাটিয়ে বলতে লাগল,
“তাজা পাকা কলা! খাও আর মজা নাও!”
শহরের লোকজন জগলুকে দেখে খুব খুশি। একজন এসে বলল,
“ভাই, এই কলা কত করে দিচ্ছেন?”
জগলু ভাবল, শহরের লোকেরা তো অনেক বড়লোক। বেশি দাম চাইলে কিছু হবে না। তাই সে বলল,
“এক ডজন ১০০ টাকা!”
লোকটি অবাক হয়ে বলল,
“১০০ টাকা? এ তো খুব সস্তা! ৫ ডজন দিন।”
জগলুর চোখ চকচক করে উঠল। দ্রুত ৫ ডজন কলা গুনে লোকটিকে দিল। তারপর আরও কয়েকজন এসে কিনতে লাগল।
জগলু এত খুশি যে সে ভুলেই গেল বাগানের কলাগুলো আগে থেকে একটু বেশি পেকে গিয়েছিল। বিকালের দিকে তার ঠেলাগাড়ি থেকে এক অদ্ভুত গন্ধ আসতে শুরু করল।
একজন ক্রেতা এসে বলল,
“ভাই, তোমার এই ফল কি আসলেই তাজা?”
হাসির গল্প বাংলা Hasir golpo Hasir golpo bangla hasir golpo bangla hasir golpo Funny Story Bangla Funny Story Bangla
জগলু তড়াক করে উত্তর দিল,
“অবশ্যই! এটা তো সকালে গাছ থেকে তুলেছি!”
লোকটি একটি কলা হাতে নিয়ে বলল,
“তাহলে এটার ভেতরে পোকা কেন নড়াচড়া করছে?”
জগলুর মুখ লাল হয়ে গেল। সে দ্রুত বলল,
“ভাই, পোকাগুলোও ফ্রি! শহরের কলায় তো এমনিতেই প্রোটিন নেই। এটা হল প্রাকৃতিক প্রোটিন!”
লোকজন হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেতে লাগল। আর জগলু ধীরে ধীরে তার ঠেলাগাড়ি নিয়ে গ্রামে ফিরে গেল। এরপর থেকে গ্রামে সবাই তাকে ‘প্রোটিন জগলু’ বলে ডাকতে শুরু করল। আরও পড়ুনঃ বাংলা গানের ক্যাপশন
মজার শিক্ষা:
জগলুর গল্প শেখায়, বুদ্ধি থাকলেও বাস্তবতা না বুঝলে হাসির পাত্র হতে বেশি সময় লাগে না! 😄
৩। গল্পের নামঃ গণ্ডগোলের গরু বিক্রি
গাবতলা গ্রামের হারুন মিয়া ছিলেন প্রচণ্ড চালাক প্রকৃতির মানুষ। তিনি ভাবতেন, গ্রামে সবাই বোকা আর তিনিই সবচেয়ে চালাক। কিন্তু তার বুদ্ধির ফল সবসময় হাসির রসদ হয়ে যেত।
একদিন হারুন মিয়ার বাড়িতে থাকা গরুটির ওপর রাগ হলো। গরুটি খুব দুষ্টু ছিল, মাঠে গেলে শুধু অন্যের ধান খেত। তাই হারুন মিয়া ভাবলেন, “এই গরু দিয়ে আর লাভ নেই। একে বিক্রি করে দেব। কিন্তু এমনভাবে বিক্রি করতে হবে যেন সবাই মনে করে এটা একটা বিশেষ গরু।”
পরদিন সকালে হারুন মিয়া গরুকে নিয়ে হাটে গেল। গরুর গলায় মালা পরিয়ে, গায়ে হলুদ মাখিয়ে চমৎকার ভাবে সাজিয়ে নিল। এরপর হাটে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে বলতে লাগল,
“এটা কোনো সাধারণ গরু নয়, ভাইয়েরা! এই গরু দুধ দেয় না, সোনা দেয়! যে কিনবে, তার কপাল খুলে যাবে!”
হারুন মিয়ার কথা শুনে অনেক লোক তার চারপাশে জড়ো হলো। একজন জিজ্ঞেস করল,
“গরুটা সোনা দেয় মানে কীভাবে?”
হারুন উত্তর দিল,
“এই গরুকে যেখানে বেঁধে রাখবেন, সেখানেই সোনা পাওয়া যাবে। তবে যারা অলস, তারা এটা বুঝতে পারবে না। সোনা খুঁজতে পরিশ্রম করতে হয়।”
কথা শুনে একজন সহজ-সরল কৃষক মনের ভেতর বিশ্বাস করে ফেলল। সে গরুর দাম জানতে চাইল।
হারুন বলল,
“মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এত কমে সোনার গরু আর কোথাও পাবেন না!”
কৃষক গরু কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরল। পরদিন ভোরে সে গরুকে তার উঠানে বেঁধে রেখে সোনা খুঁজতে লাগল। কিন্তু সে তো কিছুই পেল না! গরুটি বরং তার ক্ষেতের ধান খেয়ে আরও ক্ষতি করল।
রাগে কৃষক গরুটিকে নিয়ে হারুন মিয়ার বাড়ি ফিরে গেল।
“এই গরু তো সোনা দেয় না, বরং আমার ধান খেয়ে শেষ করে দিয়েছে!”
আরও পড়ুনঃ Short Caption
হারুন বলল,
“ভাই, আমি তো আগেই বলেছি, সোনা খুঁজতে পরিশ্রম করতে হবে। হয়তো আপনার পরিশ্রম কম ছিল।”
কৃষক চিৎকার করে বলল,
“তুমি আমাকে বোকা বানিয়েছ, হারুন মিয়া!”
কৃষকের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হল। সবাই হারুন মিয়াকে এমনভাবে বোকা বানানোর জন্য খুব হাসল। আর সেইদিন থেকে হারুন মিয়া আর কখনো কাউকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেনি।
মজার শিক্ষা:
অতিরিক্ত চালাকি করতে গেলে নিজের ওপরেই বিপদ নেমে আসে! 😄
হাসির গল্প বাংলা Hasir golpo Hasir golpo bangla hasir golpo bangla hasir golpo Funny Story Bangla Funny Story Bangla
৪। গল্পের নামঃ মজার বিয়ের নিমন্ত্রণ
রহিম মিয়া ছিলেন গ্রামের সবচেয়ে সরল মানুষ। সারাক্ষণ হেসে হেসে থাকেন এবং এমন কিছু করেন যা সবাইকে হাসিয়ে তোলে। একদিন তার ছোট ভাইয়ের বিয়ে। কিন্তু বিয়েতে যে ঘটনা ঘটল, তা সবাইকে হাসিতে কাঁপিয়ে দিল।
বিয়ের জন্য দাওয়াতপত্র ছাপানো হলো। দায়িত্ব পড়ল রহিম মিয়ার ওপর। তাকে বলা হলো, “গ্রামের সবাইকে দাওয়াত দিয়ে আসবি। কিন্তু ভুল করবি না!”
রহিম মিয়া গর্ব করে বলল,
“ভুল করব কেন? আমিই তো গ্রামের সব বাড়ি চিনি!”
রহিম মিয়া দাওয়াতপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। প্রথম বাড়িতেই গেল। সেখানে গিয়ে বলল,
“এই যে কাকা, বিয়েতে আসবেন। অনেক মজার খাবার হবে!”
কাকা জিজ্ঞেস করল,
“কার বিয়ে?”
রহিম মিয়া গম্ভীর হয়ে বলল,
“সেটা তো দাওয়াতপত্রে লেখা আছে। আপনি পড়ে নিন!”
একটু পর রহিম মিয়া গেল গ্রামের বাজারে। বাজারের মুদি দোকানদারকে বলল,
“এই নিন, আপনিও বিয়েতে আসবেন।”
মুদি দোকানদার বলল,
“বিয়েতে কী কী খাবার হবে?”
রহিম মিয়া হাসতে হাসতে বলল,
“এত কিছু জানতে চাইলে বিয়েতে আসবেন কেন? আসুন আর নিজের চোখে দেখুন!”
এরপর রহিম মিয়া ভুল করে পাশের গ্রামে গিয়ে দাওয়াত দিতে শুরু করল। সে জানতই না যে তার নিজের গ্রামে অনেকেই দাওয়াত পায়নি। পাশের গ্রামের লোকজন দাওয়াত পেয়ে খুব খুশি।
বিয়ের দিন সকালবেলা রহিম মিয়া দেখতে পেল যে পাশের গ্রামের লোকজন হঠাৎ এসে ভিড় করেছে। তারা সবাই বিয়ের খাবারের জন্য বসে পড়েছে। আর নিজের গ্রামের লোকজন রাগ করে বলছে,
“আমাদের তো দাওয়াতই দেওয়া হয়নি!”
রহিম মিয়া তখন মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল,
“আরে! আমি তো ভেবেছিলাম, সবাই আসবে। দাওয়াতপত্র দেওয়ার দরকার নেই!”
বিয়ের খাবারের অভাব দেখা দিল। পাশের গ্রামের লোকজন বড্ড খুশি, আর নিজের গ্রামের লোকজন রেগে রহিম মিয়াকে হাসি-তামাশার পাত্র বানিয়ে ছেড়েছে। সেদিন থেকেই রহিম মিয়া কোনো দায়িত্ব পেলে পালিয়ে বাঁচে।
মজার শিক্ষা:
সারল্য যদি বুদ্ধির চেয়ে বেশি হয়, তবে বিয়েতে খাবার কম পড়তে পারে! 😄
Follow Us On Facebook